
শরশাস্ত্র
অভিজ্ঞান গাঙ্গুলী#পাঠপ্রতিক্রিয়া
বইঃ শরশাস্ত্র
লেখকঃ অভিজ্ঞান গাঙ্গুলী
প্রকাশকঃ বুকফার্ম
মুল্যঃ ৩৯৬/-
লেখকের এই নিয়ে আমি দ্বিতীয় বই পড়ছি। সত্যি বলছি নতুন প্রজন্মের লেখকদের মধ্যে অন্যতম সেরা লাগে আমার অভিজ্ঞান গাঙ্গুলীর লেখনী। হয়তো তিনি খুব বেশি পুরনো লেখক নন, তবে ওনার ভাষাশৈলী ও রোমাঞ্চকর প্লট তৈরির যে অপূর্ব ক্ষমতা, তা আপনাকে আচ্ছন্ন করে রাখবে। হত্যা শাস্ত্র এক নিঃশ্বাসে এক দিনে শেষ করেছিলাম। অনেক দিনের অপেক্ষা ছিল আচার্য চাণক্য নতুন রহস্য উন্মোচন করতে আবার কবে স্বমহিমায় ফিরে আসবেন। না, তিনি আবারও আশাহত করেন নি।
শরশাস্ত্র বইটি আগের থেকে আরও বেশি পরিমার্জিত ও অধিক গুনসম্পন্ন। অনেক আগেই পড়া শেষ হয়ে গেলেও, প্রতিক্রিয়া লিখতে বেশ খানিকটা সময় নিয়ে নিলাম। তবে, আজকে ভাবলাম না দিলেই নয়।
বইটিতে মোট দুটি কাহিনী রয়েছে। একটি উপন্যাস ও একটি উপন্যাসিকা। সবকটাই নিজ নিজ মহিমায় উজ্জ্বল। রহস্যে রোমাঞ্চে ভরা এ যেন চাণক্যের আনন্দধারা।
১. সোম শাস্ত্রঃ এই কাহিনীর প্রেক্ষাপট সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যয়ের বিবাহ বাসর। শত্রুর কন্যাকে কেনই বা তিনি বিবাহ করছেন? আর সেই আসরেই হল ভাবী মহারানীকে খুনের প্রচেষ্টা। অথচ রাজকুমারীর এক দাসী কে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর মধ্যে কি কোনও যোগসূত্র আছে? আচার্য কিন্তু তার দিশা পেয়ে গেছেন। সত্যিই এই কাহিনী আপনাকে ভাবতে বাধ্য করবে। রাজনীতি, কূটনীতি, প্রেম, সম্পর্ক, ও ষড়যন্ত্রের বিস্তার করে চলেছে এই গল্পের প্রতিটি ছত্র। পাঠক কে এক বিন্দু স্বস্তি দেবে না যতক্ষণ না হচ্ছে যবনিকা পতন। তাহলে, আপনিও ভাবতে থাকুন...
২. শরশাস্ত্রঃ বিষাক্ত শর দিয়ে যে এরকম অভাবনীয় ষড়যন্ত্র করা যায়, তা এই কাহিনী না পড়লে জানতে পারতাম না। তবে এই গল্পে মূল ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন চাণক্যের অন্যতম সেরা ছাত্র ও ছায়া সঙ্গী জীবসিদ্ধি। প্রথম খণ্ডে তাঁকে পার্শ্ব চরিত্রে দেখা গেলেও, এই কাহিনী যেন তাঁকে ছাড়া অসম্পূর্ণ। সত্যি কি সাহায্য প্রার্থনাকারী রাজ্যের রাজাকে তাঁর মত দেখতে? কি রহস্য লুকিয়ে আছে সেখানে? অনেক জট ধীরে ধীরে উন্মচিত হবে। কিছু কিছু ঘটনা আবার সত্যি অকল্পনীয় ও বেদনাদায়ক। সব কিছু মিলিয়ে, এই দুই মলাটের কাহিনী সৃষ্টি করবে এক অদ্ভুত পরিবেশ। আবেগ তারিত হয়ে পড়বে পাঠক।
এই শাস্ত্র দুটি পড়ে দেখার আর্জি জানাই। রহস্য, রোমাঞ্চ, নাটকীয় মোড়, ও চরিত্র বিন্যাস কাহিনীগুলি কে এক অন্য মাত্রা এনে দেয়।
…